~ কলমে এলেবেলে প্রত্যয় ~
“এটা কি গণ স্নানাগার, যে একজন মহিলা চলে এলে আপনার সব সম্মান চলে যাবে?” কথার ঝাঁঝ এতোই জোরাল ছিল যে নিজের কানে শুনে বক্তা নিজেই যেন একটু সচকিত হয়ে উঠলেন। এক ধমকে নিস্তব্ধ পুরো মিটিং হল। এক বরিষ্ঠ দর্শনের প্রফেসার কিছু একটা বলবেন বলে আমতা-আমতা করতেই সমান ঝাঁঝ নিয়ে আবার বলে উঠলেন প্রফেসার হিলবার্ট, “এটা একটা ইউনিভার্সিটি। এখানে যিনি চাকরি করবেন তিনি পুরুষ না মহিলা এটা নিয়ে আলোচনা করার কি আছে আমি তো সেটাই বুঝতে পারছি না।”” এই প্রফেসরকে মিটিং হলের সবাই সম্যক চেনে। গণিতের দিকপাল গবেষক। জগৎ জোড়া খ্যাতি। পদার্থবিজ্ঞানেও সমান দক্ষ। আইন্সটাইনের মতো লোক বিপাকে পড়লে এনার সাহায্য নেন। এমনিতে সব ঠিকঠাক। কিন্তু কখনও কখনও মেজাজ হারিয়ে ফেলেন। আসলে ওনার ব্যক্তিগত জীবনে একটা বিরাট না পাওয়া থেকে গেছে, সেটার থেকেই হয়তো এরকম করেন। একথা অনেকেই জানে। যাই হোক, সম্মানের খাতিরেই কেউ আর কথা বাড়াল না। সবাই বুঝে গেলো, এমি আসছে। আটকানো যাবে না। স্বয়ং হিলবার্ট যখন এতোটা জেদ করছেন, তবে আর কিছুই করবার নেই। এই ঘটনা ঘটছে ১৯১৫ সালে, জার্মানির গয়েটিংগেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর যে এমিকে নিয়ে এতো ঝামেলা সে তখন বসে আছেন প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দুরে নিজের বাড়িতে, এরলাঙ্গেনে। ওখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াচ্ছেন। ইনি কিন্তু আমাদের আজকের গল্পের দ্বিতীয় এমি। তবে, এনার আগে আরেক এমির কথা বলা খুব দরকার। এবার সেই গল্পেই ঢুকবো।
এমি এসে গেছে।
এর জন্যে আমাদের যেতে হবে ফ্রান্স আর পিছিয়ে যেতে হবে আরও প্রায় ২০০ বছর। প্যারিসের বিখ্যাত ক্যাফে গ্র্যাডটে একটা টেবিল দখল করে বসে আছেন বিখ্যাত ফরাসি গণিতবিদ পিয়ের লুই মপেরটুই আর তাঁর কিছু সঙ্গী-সাথি। এই ক্যাফের একটা বড় আকর্ষণ হল এখানে প্রতি বুধবার বসে বিশেষ আড্ডা। সেখানে আসেন প্যারিসের নামজাদা সব পদার্থবিদ, গণিতজ্ঞ, দার্শনিক। একেবারে চাঁদের হাট। আলোচনা হয়, তর্ক হয়, কর্ষণ হয়। আজও বুধবার। মপেরটুই আর তাঁর সঙ্গীরা এসেছেন, কিন্তু আজ কোনও আলোচনায় তাঁদের মন নেই। মন পড়ে আছে ক্যাফের দরজার দিকে। মপেরটুই জানেন এমি আসছে। এক সঙ্গী বললেন, “”ও কি পারবে? ক্যাফেতে মহিলা ঢোকা মানা। দরজা থেকেই হয়তো ফিরিয়ে দেবে।”” মপেরটুই কিছু বললেন না। চোখ তাঁর দরজার দিকে। হঠাৎ দরজা খুলে ঢুকে এলো এক যুবক। চেহারা তুলনায় একটু ছোটো খাটো। পরনে ওয়েস্টকোটের ওপরে কোট, ব্রিচ, কাল্ভস, মাথায় ট্রিকর্নে। এক মুহুর্ত এদিক ওদিক দেখে সে সোজা এসে হাজির হল মপেরটুইদের টেবিলে। মাথার ট্রিকর্নে সরাতেই উল্লসিত হয়ে উঠল টেবিলে বসে থাকা সকলে। এমি এসে গেছে। দারোয়ান প্রথমে ঢুকতে দেয়নি, তাই ছদ্মবেশ। একজন বিশেষ ইশারা করে জোরে বলে উঠল “”সবার জন্যে কফি।”” ক্যাফের মালিক ব্যাপারটা বুঝে ওঠার আগেই এমি বসে গেছে টেবিলে। সে আপত্তি জানাতে ছুটে এলো। তারপর ভাবল মপেরটুই-এর মতো বিখ্যাত গণিতবিদ খদ্দেরকে হারালে আখেরে ক্ষতি তারই। তাই, কাছে এসে এমন ভাব দেখাল যেন এমি যে মহিলা সেটা সে বুঝতেই পারেনি। ব্যাস, এমি হয়ে গেলো ক্যাফের চাঁদের হাটের একজন।
এই এমির কথাই আগে বলবো। পুরো নাম এমিলি ডু সাটেলে। এনার সব থেকে বড় কৃতিত্ব হল, শক্তির সংরক্ষণ সূত্রের প্রস্তাবনা। শক্তির সংরক্ষণ সূত্র আমরা সকলেই আজ জানি। সোজা কোথায়, শক্তি অবিনস্বর, তাকে সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায় না। তা কেবল একরূপ থেকে অন্যরূপে রূপান্তরিত হয় মাত্র। যদিও এটা সমস্ত রকমের শক্তির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, কিন্তু এই মুহূর্তে এমির মহিমা বর্ণনায় আমরা কেবল যান্ত্রিক শক্তি নিয়েই কথা বলবো। যান্ত্রিক শক্তি শুধু দুই প্রকার। স্থিতি শক্তি আর গতি শক্তি। স্থিতি-গতির কথাই যখন উঠল তখন সবার আগে যাঁর কথা বলতে হয়, তিনি হচ্ছেন গ্যালেলিও। গ্যালেলিওর একটা প্রিয় গবেষণার বিষয় হল পেন্ডুলাম। একটা পেন্ডুলামকে একপাশে টেনে ছেড়ে দিলে সেটা দুলতে থাকে। যেটা ওনার কাছে মজার লাগলো সেটা হল যে একদিকে যতটা টেনে উনি পেন্ডুলাম ছাড়লেন, ওটা উল্টো দিকেও ঠিক অতোটাই উঠে গেলো। অথচ, মাঝপথে পেন্ডুলামটা কখনও আস্তে আবার কখনও জোরে হল। আজকের দিনে আমরা জানি যে এই পেন্ডুলামের দোলনের সময় প্রতি নিয়ত স্থিতি শক্তি আর গতি শক্তির পারস্পরিক রূপান্তর হয়ে চলেছে। কিন্তু সেদিন সেটা জানা ছিলনা। গ্যালেলিও বুদ্ধিমান লোক ছিলেন, তিনি এরকম যে কিছু অনুমান করেননি তা নয়। কিছু ইঙ্গিত তাঁর লেখায় আছে, কিন্তু খুব স্পষ্ট নয়। গ্যালেলিওর ঠিক পরেপরেই মাঠে নামলেন হাগেন্স, সপ্তদশ শতকের মাঝামাঝি। মাঠে নামলেন ভুল বলা হল, হবে নৌকায় চড়ে পড়লেন। সাথে নিলেন একাধিক পেন্ডুলাম। তাদেরকে পাশাপাশি ঝুলিয়ে দিলেন। দিয়ে শুরু করলেন পেন্ডুলামে পেন্ডুলামে ঠোকাঠুকি। অনেক পরীক্ষানিরীক্ষা শেষে ফল প্রকাশ করলেন। মোট ১৩টি প্রস্তাবনা। মূল কথা হল, দুটি বস্তু যদি চলতে চলতে পরস্পরের সাথে ধাক্কা লাগে, তো ধাক্কার আগে বস্তু দুটির মোট ভর আর বেগের গুণফল, ধাক্কা লাগার পরের মোট ভর আর বেগের গুণফল একদম সমান। আবার, ধাক্কার আগে বস্তু দুটির মোট ভর আর বেগের বর্গের গুণফল, ধাক্কা লাগার পরের মোট ভর আর বেগের বর্গের গুণফল একদম সমান। ব্যপারখানা বাকি বিজ্ঞানীদের সেই সময় ঠিক পছন্দ হল না। বেগ আর বেগের বর্গ দুজনেই একই রকম ব্যবহার করে কি করে? আজকের পাঠক জানেন, যে হাগেন্স আসলে বলতে চাইছিলেন যে দুই বস্তুর যদি ধাক্কা লাগে তবে ভরবেগ আর গতিশক্তি দুইই সংরক্ষিত থাকে।
উনি ভর আর বেগের বর্গের গুণফলের নাম দিলেন বস্তুর ‘প্রাণ শক্তি’ (ল্যাটিনে vis viva)।
হাগেন্সের ফল শেষ হতে না হতেই এবার এসে হাজির লাইবনিৎস। ইনি সেই লোক যিনি আর কয়েকবছর পর নিউটনের সাথে ‘কলনবিদ্যার কলহ’-এ জড়াবেন। খুবই বুদ্ধিমান লোক। উনি অনেক ভেবে বুঝলেন যে হাগেন্স যে এই বারবার ভর আর বেগের বর্গের গুণফল বলছেন, সেটা ফালতু না। উনি ভর আর বেগের বর্গের গুণফলের নাম দিলেন বস্তুর ‘প্রাণ শক্তি’ (ল্যাটিনে vis viva)। উনি বললেন যে কোন বস্তু যদি বাইরে থেকে কোনভাবে প্রভাবিত না হয় তবে তাঁর ‘প্রাণ শক্তি’ সর্বদা এক। তবে উনি একা নন আরও অনেকেই ছিলেন এই সময়। তাঁদের কেউ কেউ লাইবনিৎসের সাথে একমত হলেন। কিন্তু, এমনও অনেকে ছিলেন যাঁরা বললেন যে বস্তুর ‘প্রাণ শক্তি’ ভর আর বেগের বর্গের গুণফলের নয়, বরং শুধুমাত্র ভর আর বেগের গুণফলের। নিউটন এঁদের মধ্যে প্রধান। প্রায় লাইবনিৎসের সাথে সাথেই উনিও ‘প্রিন্সিপিয়া’ প্রকাশ করলেন। নিউটন এই কাজ কবে করেছিলেন বলা কঠিন হবে, কিন্তু প্রিন্সিপিয়া থেকেই সকলে জানতে পরল তাঁর বিখ্যাত গতিসূত্রগুলির কথা। নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্রে উনি ভরবেগ (ভর আর বেগের গুণফল) এবং বস্তুর উপর প্রযুক্ত বাহ্যিক বলের প্রভাব ব্যাখ্যা করছেন। লাইবনিৎসকে নিউটন এখানেই টেক্কা দিয়ে গেলেন। লাইবনিৎস বাইরে থেকে বল প্রয়োগ করলে ‘প্রাণ শক্তি’-র কি হবে বলতে পারলেন না, কিন্তু নিউটন বলে দিলেন ভরবেগের কি হবে। নিউটনের জনপ্রিয়তায় সাময়িকভাবে হলেও ভরবেগ প্রাণ শক্তিকে পেছনে ফেলে দিল।
বাধ সাধলেন সেই বারনোলিরা। ‘সেই’ বলছি কারণ নিউটন লাইবনিৎসের কথা যখনি বলবো এনারা এসেই যাবেন। জোহান বারনোলি লাইবনিৎসের আন্তরঙ্গ বন্ধু ছিলেন। কলনবিদ্যা সংক্রান্ত ঝামেলায় ইনি ছিলেন লাইবনিৎসের দলে। জোহান এবং ওনার ছেলে ড্যানিয়েল দুজনে পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু করলেন তরল প্রবাহ নিয়ে। আশ্চর্য ব্যাপার যেটা হল যে তাঁদের গণনায় বেগ এলো না, এলো বেগের বর্গ। আমরা পেলাম বারনোলির সূত্র। যদিও আজ আমরা জানি যে নিউটনের গতিসূত্র ব্যবহার করে বারনোলির সূত্র বের করা সম্ভব, কিন্তু সেদিনের এই সূত্র ছিল সম্পূর্ণ পরীক্ষালব্ধ ফল। অতএব আবার ‘প্রাণ শক্তি’ নতুন প্রাণ ফিরে পেল। এই সময়ে দালামবার্ট, ও আরও কয়েক বছর পর লাগ্রাঞ্জও এই ‘প্রাণ শক্তি’ নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করবেন। অয়লার আর লাগ্রাঞ্জ মিলে তো প্রমাণ করে ছাড়বেন যে নিউটনের গতিসূত্র ছাড়া, কেবল মাত্র ‘প্রাণ শক্তি’ অর্থাৎ গতিশক্তি, আর স্থিতিশক্তি কাজে লাগিয়েই পদার্থবিদ্যায় সব স্থিতি-গতির ব্যাখ্যা করা যায়, নিউটনের গতিসূত্রের কোন প্রয়োজন নাই। একটু উচ্চস্তরের পদার্থবিদ্যা যাঁরা পড়েছেন তাঁরা সম্যক জানেন যে ব্যবস্থা একটু জটিল প্রকৃতির হয়ে গেলেই, নিউটনের গতিসূত্রও লাগিয়ে তার সমাধান করা অতীব কঠিন, সেখানে অয়লার-লাগ্রাঞ্জ পদ্ধতি অবলম্বনই শ্রেয়। আর যাঁরা কোয়ান্টাম গতিবিদ্যা পড়েছেন তাঁরাও সম্মত হবেন যে সেখানেও গতিশক্তি, আর স্থিতিশক্তির অধিকারই বেশী।
আর এর পরেই, উনি নিউটন, ভলতেয়ার, লাইবনিৎস, বারনোলি সবার সব ধন্দ চিরকালের মতো দূর করে দিলেন।
কিন্তু এই সবের আগে দরকার পড়বে আরেকজনকে, আমাদের এমিকে। এমির জীবনটি ছোট। মাত্র ৪২ বছরের। বেশ সম্ভ্রান্ত ফরাসি বংশের মেয়ে। জীবনের প্রথমদিকটা ওনার কেটে গেলো আর পাঁচটা অভিজাত বাড়ির মেয়েদের মতোই। পড়াশোনা শিখলেন। ১৮তে বিয়ে হল। তারপর বাচ্চা। ১৭৩৩ সাল নাগাদ ২৬ বছর বয়সে এমি বিজ্ঞানচর্চার পথে পা বাড়ালেন। ততদিনে তাঁর তিনটি সন্তান। মপেরটুই-এর কাছে প্রথমে শিখলেন বীজগণিত আর কলনবিদ্যা। তারপর তাঁর শিক্ষকের তালিকায় নাম ঢুকতে লাগলো ফ্রান্সের তাবৎ বিখ্যাত গণিতজ্ঞের। শেষে ওনার সাথে দেখা হল ভলতেয়ারের। সেই ফরাসি বিপ্লবের ভলতেয়ার। ভলতেয়ার হয়ে গেলেন এমির বন্ধু। এমির বাড়িতেই স্থান হল ভলতেয়ারের। দুজনে চুটিয়ে শুরু করলেন গবেষণা। ল্যাব বানানো হল। ভলতেয়ারের জীবনের ওপর এমির এমন প্রভাব ছিল যে নিজের নিউটনের দর্শন সংক্রান্ত বই লিখতে গিয়ে ভলতেয়ার তাতে একটা ছবি দিলেন, সেই ছবিতে নিউটন বসে আছেন সবার ওপরে, দেখতে অনেকটা ভগবানের মতো। সেখান থেকে জ্ঞানের আলো বেরিয়ে আসছে, সেই আলো এমি একটা আয়না দিয়ে প্রতিফলিত করে ফেলছেন নিচে বসা ভলতেয়ারের উপর। ভলতেয়ার ছিলেন নিউটনের একনিষ্ঠ অনুগামী। উনিও মনে করতেন যে বস্তুর যদি কোন ‘প্রাণ শক্তি’ থেকে থাকে তো তা হচ্ছে ভরবেগ, ঐ বেগের বর্গ-ফর্গ করে কোন লাভ নেই। এমি একমত হলেন না। উনি করলেন একটা পরীক্ষা। একটা নরম মাটির তালকে ইঁটের মতো আকার দিলেন। এবার বললেন আমি একটা ছোট ধতব বল ওপর থেকে এই মাটিতে ফেলব, বিভিন্ন উচ্চতা থেকে। আমি দুটো জিনিস মাপবো, ১) ঐ বল কতো বেগে মাটিকে আঘাত করছে, আর ২) ওটা নরম মাটির ভেতরে কতোটা ঢুকে যাচ্ছে। সোজা পরীক্ষা। করে ফেললেন। ফল পেলেন এরকম: বলটা মাটিতে যতটা ঢুকছে সেটা
১) কোন উচ্চতা থেকে ওকে ফেলা হচ্ছে তার সমানুপাতিক, এবং
২) বলটা মাটিকে যে বেগে আঘাত করছে তার বর্গের সাথে সমানুপাতিক।
আর এর পরেই, উনি নিউটন, ভলতেয়ার, লাইবনিৎস, বারনোলি সবার সব ধন্দ চিরকালের মতো দূর করে দিয়ে বললেন যে বস্তুর ‘প্রাণ শক্তি’ ভর ও বেগের গুণফল নয়, ভর ও বেগের বর্গের গুণফল, এবং সেই সাথে প্রথমবারের মতো প্রস্তাব করলেন শক্তির নিত্যতা সূত্রের একদম প্রাথমিক রূপ। বললেন, বলটা যখন ওপর থেকে ছাড়া হল, আর যখন বলটা মাটিতে নেমে এলো দুই ক্ষত্রেই তার শক্তি এক। ওপরে থাকার সময় শক্তি হয়তো অন্য রূপে ছিল, নিচে নেমে আসার সময় হয়তো তা অন্য শক্তিতে পরিণত হল, কিন্তু তাঁদের মধ্যে সবসময় একটা সম্পর্ক বিদ্যমান। তখন স্থিতিশক্তি ব্যাপারটা মানুষের অবগত ছিল না। কিন্তু, এমির এই বক্তব্যই পরে এই বল ফেলার সময় স্থিতিশক্তির গতিশক্তিতে রূপান্তরকে প্রতিষ্ঠা করে। বিজ্ঞানের আরও প্রগতির সাথে সাথে মানুষ বুঝতে পারে যে, এই বক্তব্য কেবল যান্ত্রিকশক্তির ক্ষেত্রেই নয়, অন্য সমস্ত রকমের শক্তির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। শক্তি স্থির, কেবল তার রূপান্তর সম্ভব।
ব্যাস! আর কি? এমির এই বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করেই আয়েলার আর লাগ্রাঞ্জ মিলে বের করে ফেললেন বস্তুর স্থিতি-গতির ক্ষেত্রে শক্তির সংরক্ষণ সূত্রের গুরুত্ব। প্রমাণ করে দিলেন যে নিউটনের গতিসূত্রের থেকেও শক্তির নিত্যতা সূত্রের ব্যাপ্তি অনেক অনেক বেশী। কিন্তু ততদিনে এমি আর নেই। কয়েক মাস আগেই, চতুর্থ সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে তিনি মারা গেছেন।
(ক্রমশ)
এমি আসছে: পর্ব ২
এলেবেলের দলবল
► লেখা ভাল লাগলে অবশ্যই লাইক করুন, কমেন্ট করুন, আর সকলের সাথে শেয়ার করে সকলকে পড়ার সুযোগ করে দিন।
► এলেবেলেকে ফলো করুন।
এলেবেলে – Elebele